ব্যাডমিন্টনের কোর্টগুলো অনেকদিন ধরেই নীরব। সন্ধ্যার আলোয় র্যাকেটের শব্দ যেন কমে গেছে। সেই নীরবতা ভাঙতে এবার এগিয়ে এসেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ২৪ নভেম্বর ২০২৫, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ নতুন করে গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের কমিটি। সভাপতি হয়েছেন দেশের পরিচিত বানিজ্য উদ্যোক্তা এবং ক্রীড়া সংগঠক মো. হাবিব উল্লাহ ডন। তাঁর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাসেল কবির সুমন। মোট ১৯ সদস্যের এই কমিটিকে ঘিরে আবারও আশার আলো দেখছেন খেলাটির অনুরাগীরা।
মো. হাবিব উল্লাহ ডন নামটি ক্রীড়াঙ্গনে তিন দশকের পুরোনো। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট কমিটির সহ-সভাপতি হিসেবে তিনি একসময় আলোচিত ছিলেন। পরে জিমন্যাস্টিক ফেডারেশন আর ভলিবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতির দায়িত্বেও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকেন। তাঁর কাজের ধরণ ছিল একেবারে সরল—তৃণমূলে খেলাধুলাকে ছড়িয়ে দেওয়া, নতুন খেলোয়াড় তুলে আনা।
কেবল সংগঠক নয়, খেলোয়াড় হিসেবেও তিনি ব্যাডমিন্টনের কোর্টে দাপট দেখিয়েছেন। গুলশান, ঢাকা ও বনানী ক্লাবের বিভিন্ন খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে একসময় নিয়মিত উপস্থিতি ছিল তাঁর। গুলশান ব্যাডমিন্টন ক্লাবের অন্যতম সংগঠক হিসেবেও তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। নানা ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তিনি অনেক পুরস্কার জিতেছেন— তিনি বলেন, “খেলাটা ভালো লাগতো, তাই খেলতাম।”
ব্যবসায়িক পরিচয়ে তিনি এ.এম. গ্রুপের চেয়ারম্যান। অটোমোবাইল, এয়ারলাইন্স, রিয়েল এস্টেট, স্পোর্টস ও ওয়েলনেস ইক্যুইপমেন্ট—বিভিন্ন খাতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিস্তৃত। এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি বারভিডার সভাপতি হিসেবে চার মেয়াদ নেতৃত্ব দিয়ে রিকন্ডিশন্ড মোটরযান খাতে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা আনতে ভূমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশ ও কমনওয়েলথভুক্ত স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের যৌথ চেম্বারের সভাপতিও তিনি।
ফেডারেশনের পুনর্গঠিত কমিটিতে দীর্ঘদিন পর সত্যিকার পেশাদার এবং ক্রীড়া–অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্বরা জায়গা পাওয়ায় ব্যাডমিন্টন অঙ্গনে স্বস্তি নেমেছে। অনেকে বলছেন—এবার হয়তো জেলা–উপজেলায় আবারও দেখা যাবে ব্যাডমিন্টনের প্রাণচাঞ্চল্য। নতুন হল, উন্নত অবকাঠামো, আর নিয়মিত জাতীয়–আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন—এসবই এখন আশার তালিকায়।
নতুন কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—
সহ-সভাপতি: সফিউল আলম, মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী
যুগ্ম সম্পাদক: বেগম তাপটুন নাসিরন
কোষাধ্যক্ষ: মো. রাইসউদ্দিন
সমস্ত মিলিয়ে ব্যাডমিন্টনের কোর্টে যেন ফের আলো জ্বালানোর প্রস্তুতি চলছে। এখন তাকিয়ে সবাই—এই কমিটির হাত ধরে কত দূর এগোয় দেশের ব্যাডমিন্টন।